পার্থেনিয়াম - Parthenium
আমরা সকলেই গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পার্থেনিয়াম আগাছার জঙ্গল দেখতে পাই। এগুলো ক্ষতিকারক। তাই এই আগাছার সমূলে বিনাশ কাম্য। পার্থেনিয়াম কিভাবে আমাদের দেশে আসলো।
তথ্য - ১ :১৯৪৫ সালের আগে ভারতবর্ষে পার্থেনিয়াম ছিল না। এল কীভাবে? ভারতবর্ষের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমানে গম আনা হয়। ঐ গমের সাথে সে দেশের জমির আগাছার বীজ মিশে গিয়ে আমাদের দেশে চলে আসে। এবার গম আমদানি হওয়ার পর রেলপথে সারাদেশে গম সরবরাহ করা হয়। তাই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় চেপে গমের দানার সাথে কিছু পার্থেনিয়াম দানাও সারা ভারতের বিভিন্ন রেলপথের ধারে ধারে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর বাকিটা এই আগাছার ভয়ঙ্কর দ্রুত বংশবিস্তার ক্ষমতার ভেল্কি। তাই আজও যে কোনও রেলপথের দুধারে এদের সহজে দেখতে পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম পার্থেনিয়াম দেখা যায় ১৯৭৫ সালে ডানকুনি রেলইয়ার্ডে।
তথ্য - ২ : পার্থেনিয়াম সারা বিশ্বের সবচেয়ে আক্রমনাত্মক বিস্তারকারী ও স্থানীয় পরিবেশ ধ্বংসকারী উদ্ভিদের ১০০টি তালিকার একটি। বর্তমানে ভারতবর্ষের ৫০-৬০ লক্ষ হেক্টর জমি এই আগাছার দখলে। একে ফুল আসার আগেই ধ্বংস করে ফেললে পরের বছর প্রকোপ অনেকটাই কম থাকে।
তথ্য - ৩ : এই পুরো আগাছাটিই সম্পূর্ণ ক্ষতিকর। বিশেষ করে ফুলের রেনুতে অবস্থিত বিষাক্ত পদার্থ "পার্থেনিন "। এছাড়াও এই আগাছার মধ্যে আরও কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান আছে। এইসব রাসায়নিক ক্ষতস্থানে রক্তের সঙ্গে মিশে চর্মরোগ ঘটাতে পারে। ফুলের রেনু বা বীজ নাকে প্রবেশ করিলে হাঁপানি , শ্বাসকষ্ট, জ্বর হয়। গরু এই আগাছা খেলে তার অন্ত্রে ঘা দেখা দেয়, দুধ উৎপাদন কমে যায়। এর পুস্পরেনু বেগুন, টমাটো, লঙ্কার মতো সব্জি উৎপাদন ব্যাহত করে। মাটিতে নাইট্রোজেন আবদ্ধকরনের পক্রিয়াকে নষ্ট করে ফেলে। পার্থেনিয়াম খেলে গবাদি পশুর মুখে ও পৌষ্টিকতন্ত্রে ঘা, যকৃতে পচন প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যাদের অ্যলার্জি আছে তাদের বেশি সচেতন থাকতে হবে। কারণ তাদের চামড়ায় এই রস লাগালে, সেখানে ক্যান্সার হতে পারে ।
Comments
Post a Comment